ইসলামের ইতিহাসে প্রথম ভাস্কর্য

ইদ্রিস (আঃ) ইসলামের অন্যতম একজন নবি। উনাকে পাঠানো হয় “বাবিলন” সভ্যতার জন্য। যাকে বলা হয় পৃথিবীর সর্ব প্রথম সভ্যতা। উনি নবুয়াত প্রাপ্তির পূর্বে নবি শীথ (আঃ) এর উপর পাঠানো বানী অনুসরণ করতেন যিনি ছিলেন অ্যাডাম/আদম (আঃ) এর সন্তান। উনার জীবদ্দশায় উনার সব অনুসারিরা মুসলিম ছিলেন। যদিও তারা মুসলিম (শিরক করত না) ছিল, তারা পাপাচারে লিপ্ত ছিল। তাই তিনি হিজরত করেন বাবিলন থেকে এবং তার সাথে তার কিছু অনুসারিরাও হিজরত করে। তিনি তার অনুসারিদের আশ্বস্ত করেন যে “যদি আমরা আল্লাহের উদ্দেশে হিজরত করি আল্লাহ্‌ আমাদের দেখভাল করবেন।” 

তারা হিজরত করে নীল নদীর তিরে আসেন এবং সেখানে নতুন বশতি স্থাপন করেন। উনার মৃত্যুর পর জমিনে দুর্নীতির পরিমাণ বেড়ে যায়,যদিও মানুষ তখনো মুসলিমই ছিল। শিরক তখনো শুরু হয় নি। তারা বিভিন্ন হারাম কাজে লিপ্ত হলেও শিরক করত না। সবার বিশ্বাস মনোথিসমেই ছিল। এরকম ভাবেই চলে প্রায় ইদ্রিস (আঃ) মৃত্যুর প্রায় ১০০০ বছর। 

ইদ্রিস (আঃ) এর মৃত্যুর পর নতুন নবী আসার আগ পর্যন্ত একটা বিশাল পথপ্রদর্শকহীন সময় কাটে। অনেক পরিবর্তন আসে এই সময়ে, পরবর্তী নবী নুহ/নোয়াহ (আঃ) আসার আগ পর্যন্ত। এর মাঝে কয়েক শতাব্দী কেটে যায়। 

ইদ্রিস (আঃ) এর অনুসারিরা ছিলেন ধার্মিক, খোদাভিরু, এবং সৎকর্মশীল। উনার মৃত্যুর পর তাদেরকেই মানুষ অনুসরণ করা শুরু করে। তাদের কাছেই মানুষ সকল সমস্যার সমাধানের জন্য উপস্থিত হতেন। 

উনাদের মৃত্যুর পর উনাদের ইদ্রিস (আঃ) এর প্রত্যক্ষ অনুসারীদের অনুসরণকারীদের অনুসরণ করা শুরু করে তখনকার মানুষ। উনাদের যখন মৃত্যু হয়, তখন মানুষের মাঝে প্রশ্নের উদয় হয়, যে এখন তারা কাদের অনুসরণ করবে? ইবলিশ এই সময়টা বেছে নেয় দুর্বল চিত্তের মানুষের ইমানকে ভুল পথে চালনা করতে। 

শাইতান মানুষের প্রতিকৃতিতে উপস্থিত হয় তাদের মাঝে। তাদের বলতে থাকে “ তোমরা কি জান না, কত মহান ছিলেন এই মানুষেরা? কতই না মহান?” সে তাদের মধ্যে এসে বিষাদ করতে থাকে। সে সবার মধ্যে পরচিতি লাভ করে, সব চাইতে বড় অনুসারি রুপে। এর পর থেকে যেখানে কোন প্রবীণ অনুসারীদের মৃত্যু হত শয়তান সেখানে উপস্থিত হত। এর পর সে প্রচার করা শুরু করে “আমাদের এই মহান সৎকর্মশীল প্রবীণদের স্মরণ রাখার জন্য কোন স্বারক প্রস্তুত করা দরকার, অন্যথায় তাদের সৎকর্ম সম্পর্কে মানুষ অজ্ঞ থেকে যাবে, এবং এটা করতে হবে খুব শিগ্রই।” শাইতান পরামর্শ দিল তাদের কিছু চিত্র অঙ্কন ও স্বারক ভাস্কর্য তৈরি করার তাদের স্মরণীয় করে রাখতে। 

এরপর শয়তান অপেক্ষা করে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। সে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে প্রচার করে “তোমাদের কি হয়েছে? তোমরা কেন তোমাদের পূর্বপুরুষদের সম্মান করছ না? তোমরাওতো একদিন মারা যাবে। এই অঙ্কন চিত্র ও ভাস্কর্য গুলো কি দেখেছ? এরা তোমাদের সৎকর্মশীল পূর্বপুরুষ। এদের তোমরা সম্মান প্রদান কর। তখন তারা তাদের পূর্বপুরুষদের সম্মান প্রদান করা শুরু করল। 

এরপর এলো তাদের পরবর্তী প্রজন্ম। সে তাদের কাছে প্রচার করে “কেন তোমরা তোমাদের এই সম্মানিত পূর্বপুরুষদের কাছে নত জানু হচ্ছ না? যখন তোমরা দেখেছ তোমাদের বাপ দাদাদের উনাদের সম্মান প্রদর্শন করতেন?” 


Hadad (Ancient semetic god of Bablylonia)


এরপর সে আবার আসে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে। সে তাদের পথভ্রষ্ট করে এই বলে যে “এরা তোমাদের জীবন দানকারি, এরা তোমাদের রিযিক প্রদানকারি, এবং তোমাদের যা কিছু আছে সব তাদের জন্যই। তোমরা দেখেছ তোমাদের বাপ দাদাদের নতজানু হতে। তোমরা কেন তাদের সম্মানার্থে মাটিতে সেজদায় লুটাচ্ছ না?” 

এর পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সে প্রচার করতে লাগল “দেখ এরাই সৃষ্টিকর্তা (নাউজুবিল্লাহ)”। 

হাজার বছর মেহেনতের মাধ্যমে শাইতান সক্ষম হয় মানব জাতিকে শিরক করাতে। সে তাদের মাঝে কৌশলে ফিতনার প্রচার করে। এই প্রতিকৃতি, মূর্তি, এবং পূর্বপুরুষদের সম্পর্কে ভুল এবং বানোয়াট ধারনার প্রচার করে। এরপর তারা এই প্রতিকৃতি এবং ভাস্কর্যের শ্রেণী বিভাগ করতে থাকে এই বলে যে, এটি আমাদের বৃষ্টি দেয়, এটি আমাদের সন্তান দান করে ইত্যাদি। এর কারনেই আল্লাহ্‌ তাদের উপর পরবর্তীতে নুহ (আঃ) কে পাঠান। আর আমরা সবাই জানি নুহ (আঃ) কে পাঠানো হয় একটি অনেক একগুঁয়ে পথভ্রষ্ট জাতীর উপর। 


(এইটি একটি ইসলামিক ইতিহাস, ঐতিহাসিক ইতিহাস নয়। মুসলিম হিসেবে আমাদের এই কাহিনী বিশ্বাস করতে হবে। বিশ্বাস অবিশ্বাস সম্পূর্ণ বেক্তিগত ব্যাপার। )


Sources: 

1. https://ummibraheem.wordpress.com/2011/09/03/the-beginning-of-shirk/

2.https://www.askislampedia.com/wiki/-/wiki/English_wiki/Origins+of+Shirk/pop_up;jsessionid=51AF6C68F4290493579C2722FE9C179F?_36_viewMode=print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *